চাকরের গর্ভে মনিবের জন্ম! কিয়ামত তবে অত্যাসন্ন (অনুবাদ)

Woman and child

সুপ্রসিদ্ধ হাদিসে জিবরীলের কথা আমরা প্রায় প্রত্যেকে জানি। সাহাবীদের ইসলামের মৌলিক বিষয়াবলী শিক্ষা দেওয়ার জন্য ফেরেশতা জিবরাইল (আ.) একদিন মানুষের আকৃতিতে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট এসে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। তার মাঝে একটি প্রশ্ন ছিল ‘কিয়ামত কবে হবে?’ উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘‘এ বিষয়ে যাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে তিনি প্রশ্নকারীর চাইতে অধিক কিছু জানেন না।’’ আগন্তুকের বেশ ধারণকারী  জিব্রাইল (আ.) বললেন, ‘‘তবে কিয়ামতের নিদর্শনসমূহ সম্পর্কে বলুন।’’ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘‘কিয়ামতের নিদর্শন হলো — দাসী তাঁর আপন মুনিবকে প্রসব করবে; তুমি আরও দেখতে পাবে নগ্নপায়ী বিবস্ত্র হতদরিদ্র মেষপালকেরা বড় বড় দালানকোঠা নিয়ে গর্ব ও অহংকার করবে।’’

মা হবে দাসী আর যাকে প্রসব করা হবে সে হবে মালিক — আমি কখনোই হাদিসের এই অংশটি ভালোভাবে বুঝতে পারিনি।

অনেকেই বিভিন্নভাবে এটি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন।

সম্প্রতি আমি জানতে পারলাম, বিশ্বের নির্দিষ্ট কিছু অংশে – আমি তার নাম বলবো না – যেখানকার মানুষ অনেক টাকাপয়সার মালিক। আর তাদের চাকরবাকরেরও কোনো অভাব নেই। সেই অঞ্চলের কিছু কিছু মেয়ে প্রসব যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যেতে চায় না। তাদের সৌন্দর্য নষ্ট হবে, শারীরিক কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হবে ইত্যাদি নানা কারণে তারা এটা করতে চায় না। তারা সন্তান চায় কিন্তু নিজের শরীরের কোনো ক্ষতি চায় না।

তাই তারা বিশ্বের বিভিন্ন গরিব দেশ থেকে চাকর মেয়ে নিয়ে আসে এবং সারোগেট প্রেগন্যান্সি পদ্ধতিতে মেয়েটার গর্ভ ভাড়া করে।

সারোগেট প্রেগন্যান্সি হলো — মায়ের কাছ থেকে ডিম্বাণু এবং বাবার কাছ থেকে শুক্রাণু নিয়ে কৃত্রিম উপায়ে নিষিক্ত করা হয়। তারপর একটি বা আরো বেশি ভ্রূণ নিয়ে অন্য একজন ভাড়া করা মেয়ের গর্ভে তা স্থানান্তর করা হয়। যার গর্ভ ভাড়া করা হয় তাকে বলা হয় সারোগেট মাদার। তারপর সারোগেট মা এই সন্তানকে পেটে বহন করতে থাকে এবং একসময় তাকে জন্ম দেয়। সারোগেট মায়ের সাথে সন্তানের কোনো জেনেটিক সম্পর্ক থাকে না, কারণ ডিম্বাণু তার নিজের ছিল না। এককথায়, সারোগেট মা অন্য এক ব্যক্তি বা দম্পতির সন্তান প্রসব করে থাকে।

এখন দেখুন, চাকর মেয়েটি, যাকে তারা অন্য দেশ থেকে ভিসা দিয়ে এনেছে সে তাদের সন্তানের জন্ম দিচ্ছে তারপর এই সারোগেট মা তার বাকি জীবন এই সন্তানের সেবা করেই কাটিয়ে দিবে। কারণ সে তো ওই বাড়ির চাকর, আর যাকে সে জন্ম দিয়েছে সে ওই বাড়ির মালিকের সন্তান। এই সন্তানের সাথে তার কোনো জেনেটিক সম্পর্ক নেই। তাহলে দেখুন, একেবারে আক্ষরিক অর্থেই দাসী তার মুনিবকে প্রসব করছে। একেবারে আক্ষরিক অর্থেই!

আবার সেই একই হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন – “নগ্নপায়ী বিবস্ত্র হতদরিদ্র মেষপালকেরা বড় বড় দালানকোঠা নিয়ে গর্ব ও অহংকার করবে।” হাদীসটি এমনকি ভৌগোলিকভাবেও সম্পর্কযুক্ত।

প্রসঙ্গত, তারা এই সমস্ত খবর সংবাদপত্রে আসতে দেয় না। সবাই ব্যাপারটা জানে, কিন্তু এটা নিয়ে কথা বলা যাবে না।

এখন আপনি এটা পড়ছেন আর অবাক হয়ে বসে আছেন। ১৪০০ বছরেরও বেশি সময় যাবত এই হাদীসটি আমাদের মাঝে ছিল। আমরা এখন এর বাস্তবায়ন প্রত্যক্ষ করছি। এটা আসলেই ভয়ংকর। আসলেই আশ্চর্যজনক।

প্রিয় ভাইয়েরা, কিয়ামত নিকটবর্তী। পাপ ছাড়ুন। নামাজ পড়ুন। অন্যথায়, আফসোসের কোনো অন্ত থাকবে না।

বায়্যিনাহ.টিভি-তে উস্তাদ নু’মান আলী খানের সূরা আলে ইমরানের ৪২ তম পর্বের আলোচনা থেকে অনুপ্রাণিত। অনুবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় Nouman Ali Khan Collection In Bangla ফেসবুক পেইজে।  

আরও পড়ুন:

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান